গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায় | প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ


প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ:

প্রাথমিক লক্ষণ (গর্ভধারণের ১-২ সপ্তাহ পর):

  • পিরিয়ড বাদ: গর্ভধারণের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হলো পিরিয়ড বাদ যাওয়া।
  • হালকা রক্তপাত: কিছু ক্ষেত্রে, গর্ভধারণের ৬-১০ দিন পর যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হতে পারে।
  • বুকের পরিবর্তন: স্তনে ব্যথা, স্পর্শকাতরতা, এবং আকার বৃদ্ধি অনুভব হতে পারে।
  • ক্লান্তি: অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।
  • বমি বমি ভাব: বিশেষ করে সকালে বমি বমি ভাব হতে পারে।
  • মাথা ঘোরা: হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাথা ঘুরতে পারে।
  • মেজাজের পরিবর্তন: হঠাৎ মেজাজের পরিবর্তন হতে পারে।
  • খাবারের প্রতি অনীহা: পছন্দের খাবারের প্রতি অনীহা বা নতুন খাবারের প্রতি আগ্রহ দেখা দিতে পারে।
  • বারবার প্রস্রাব: প্রায়শই প্রস্রাবের ইচ্ছা হতে পারে।

মাঝারি লক্ষণ (গর্ভধারণের ৩-৮ সপ্তাহ পর):

  • বমি বমি ভাব এবং বমি: বমি বমি ভাব তীব্র হতে পারে এবং দিনের যেকোনো সময় বমি হতে পারে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য: হরমোনের পরিবর্তনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
  • স্তনবৃন্তের পরিবর্তন: স্তনবৃন্ত গাঢ় রঙ ধারণ করতে পারে।
  • পেটে ব্যথা: হালকা পেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • মাথাব্যথা: মাথাব্যথা হতে পারে।
  • ঘুমের পরিবর্তন: অতিরিক্ত ঘুম বা অনিদ্রা দেখা দিতে পারে।

উন্নত লক্ষণ (গর্ভধারণের ৯-১২ সপ্তাহ পর):

  • গর্ভের আকার বৃদ্ধি: পেটের আকার সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • গর্ভের ভ্রূণের নড়াচড়া: গর্ভের ভ্রূণের নড়াচড়া অনুভব করা ।
  • ভ্রূণের হৃদস্পন্দন: ডাক্তারের সাহায্যে ভ্রূণের হৃদস্পন্দন শোনা ।

মনে রাখবেন:

  • এই লক্ষণগুলো সব নারীর ক্ষেত্রে একই রকম নাও হতে পারে।
  • কিছু নারী একেবারেই কোন লক্ষণ অনুভব নাও করতে পারেন।
  • অনিশ্চিত হলে, গর্ভধারণ পরীক্ষা (pregnancy test) করে নিশ্চিত হতে পারেন।
  • গর্ভধারণের পর নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস:

  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুমান।
  • ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন।
  • মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা

গর্ভবতী হওয়ার ১ম সপ্তাহের লক্ষণ

গর্ভবতী হওয়ার ১ম সপ্তাহে লক্ষণগুলি খুবই সূক্ষ্ম এবং অনেক ক্ষেত্রেই বোঝা কঠিন হয়। কিছু সম্ভাব্য লক্ষণ :

মাসিক বন্ধ: গর্ভধারণের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হলো মাসিক বন্ধ হওয়া।

হালকা রক্তপাত: কিছু ক্ষেত্রে, গর্ভধারণের 6-10 দিন পর যোনিপথে হালকা রক্তপাত হতে পারে।

বুকের পরিবর্তন: স্তনে ব্যথা, স্পর্শকাতরতা, এবং আকার বৃদ্ধি অনুভব হতে পারে।

ক্লান্তি: অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।

অন্যান্য সম্ভাব্য লক্ষণ:

  • বমি বমি ভাব
  • মাথা ঘোরা
  • মেজাজের পরিবর্তন
  • খাবারের প্রতি অনীহা
  • বারবার প্রস্রাব

মনে রাখবেন, এই লক্ষণগুলি সব নারীর ক্ষেত্রে একই রকম নাও হতে পারে। অনেকেই ১ম সপ্তাহে কোন লক্ষণ অনুভব করেন না।

গর্ভধারণের ১ম সপ্তাহে নিশ্চিত হওয়ার উপায়:

  • গর্ভধারণ পরীক্ষা (pregnancy test): গর্ভধারণের 10-14 দিন পর প্রস্রাব বা রক্তের পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন।
  • ডাক্তারের পরামর্শ: ডাক্তারের পরামর্শ এবং শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন।

গর্ভধারণের পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস:

  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুমান।
  • ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন।
  • মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন।
  • নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং পরামর্শ নিন।

গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়

গর্ভবতী হওয়ার পর বমি বমি ভাব বা বমি কতদিন পর শুরু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। কারণ, এটি প্রতিটি মহিলার ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে।

তবে, সাধারণত গর্ভধারণের ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পর বমি বমি ভাব শুরু হয়

কিছু ক্ষেত্রে, গর্ভধারণের এক মাস পর থেকেই বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।

আবার অনেকের ক্ষেত্রে, প্রথম তিন মাস পর্যন্ত বমি বমি ভাব থাকতে পারে।

কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বমি হতে পারে

বমি বমি ভাব এবং বমির কারণ

গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন বমি বমি ভাবের প্রধান কারণএছাড়াও, নিম্নলিখিত কারণগুলি বমি বমি ভাবের জন্য দায়ী হতে পারে

  • রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া
  • অ্যাসিডিটি
  • গ্যাস্ট্রো এসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD)
  • খাবারের প্রতি অরুচি
  • গন্ধের প্রতি সংবেদনশীলতা

বমি বমি ভাব এবং বমি কমাতে কিছু উপায়

  • বারবার অল্প অল্প খাবার খাওয়া
  • শুকনো খাবার খাওয়া
  • প্রচুর পানি পান করা
  • কাঁচা আদা খাওয়া
  • লেবুর পানি পান করা
  • প্রচুর বিশ্রাম নেওয়া
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি ওষুধ খাওয়া

যদি বমি বমি ভাব অনেক বেশি হয় এবং কোন ওষুধে কাজ না করে তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন

৪ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া

৪ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া

৪ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া সম্পর্কে জানা প্রয়োজনীয় তথ্য নিম্নরূপ :

কখন নড়াচড়া অনুভব করা যায় ?

  • সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রথম বার নড়াচড়া অনুভব করা যায়
  • প্রথম বার নড়াচড়া খুব সুক্ষ্ম হয় এবং বুঝতে কষ্ট হতে পারে
  • ক্রমশ নড়াচড়া স্পষ্ট হতে থাকে

নড়াচড়া কিভাবে অনুভব করা যায় ?

  • পেটে ফড়িং বা বলবল করার মত অনুভূতি হতে পারে
  • শিশু হাত পা ছুঁড়ে বা ঘুরতে চেষ্টা করলে সেটা অনুভূত হতে পারে

নড়াচড়ার ধরন কি কি হতে পারে ?

  • ধাক্কা মারা
  • লাথি মারা
  • ঘোরাঘুরি করা
  • ফড়িং করা

নড়াচড়ার পরিমাণ কত হওয়া উচিত ?

  • দিনে কম পক্ষে ১০ বার নড়াচড়া করা উচিত
  • নড়াচড়ার পরিমাণ একেক দিন একেক রকম হতে পারে

কখন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত ?

  • নড়াচড়া কমে যাওয়া
  • নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • অনেক বেশি নড়াচড়া করা

নড়াচড়া গণনা করার পদ্ধতি

  • দুপুরে ভরপেট খেয়ে বাঁ কাঁটে শুয়ে বিশ্রাম নিয়ে নড়াচড়া গণনা করা উচিত
  • প্রতি দুই ঘণ্টায় কতবার নড়ে উঠল সেটা হিসাব রাখা
  • ঘণ্টায় অন্তত ১০ বার নড়াচড়া করা স্বাভাবিক

২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

দুই মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

প্রোটিন

  • মাছ: রুই, কাতলা, মৃগেল, চিংড়ি, তেলাপিয়া, বাইলা
  • মাংস: গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগির মাংস
  • ডিম: সপ্তাহে ৩-৪ টি
  • ডাল: মুগ ডাল, মসুর ডাল, ছোলা, অড়হর ডাল
  • দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই, পনির

কার্বোহাইড্রেট

  • ভাত: সাদা ভাত, বাদামী ভাত
  • রুটি: আটা, গমের রুটি
  • চাল: পোলাও, খিচুড়ি
  • ফল: আপেল, কলা, পেঁপে, আঙ্গুর, আম, জাম্বুরা
  • শাকসবজি: পুঁইশাক, শালগম, লাউ, কুমড়া, ব্রকলি, ফুলকপি

চর্বি

  • বাদাম: কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তা বাদাম
  • তেল: সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, জলপাই তেল
  • ঘি

ভিটামিন ও খনিজ

  • ফল: কমলালেবু, আঙ্গুর, বেদানা, জাম্বুরা
  • শাকসবজি: পালং শাক, ব্রকলি, ফুলকপি, টমেটো
  • মাছ: রুই, কাতলা, মৃগেল, চিংড়ি
  • মাংস: গরুর মাংস, খাসির মাংস
  • ডিম
  • ডাল: মুগ ডাল, মসুর ডাল, ছোলা, অড়হর ডাল
  • দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই, পনির

পানি

  • প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।

কিছু টিপস

  • দিনে ৫-৬ বার অল্প অল্প করে খান।
  • বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • কাঁচা খাবার, অপরিপক্ক খাবার এবং মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুমান।
  • কোনো সমস্যা হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url