নামাজের সময়সূচি ২০২৪ - পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচি ২০২৪ উপস্থাপনা

 

নামাজের সময়সূচি ২০২৪ - পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচি ২০২৪ উপস্থাপনা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়:

ফজরের নামাজ: সুবহে সাদেক থেকে সূর্য উদয়ের আগ পর্যন্ত।

জোহরের নামাজ: সূর্য মধ্যাহ্নের দিকে উঠে এসে ছায়া যখন নিজের দৈর্ঘ্যের সমান হয়, তখন থেকে সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।

আসরের নামাজ: সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত।

মাগরিবের নামাজ: সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে সন্ধ্যায় লাল আভা দূর হওয়ার আগ পর্যন্ত।

ইশার নামাজ: সন্ধ্যায় লাল আভা দূর হয়ে যাওয়ার পর থেকে ভোরের আলো ফোটার আগ পর্যন্ত।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত:

  • নামাজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম।
  • নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে, তাঁর স্মরণে থাকে এবং তাঁর নির্দেশাবলী মেনে চলার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করে।
  • নামাজের ফলে গুনাহ মাফ হয়, ঈমান বৃদ্ধি পায়, আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়, বাড়ি-ঘর থেকে শয়তান দূর থাকে, জান্নাতের পথে সহায়তা পাওয়া যায়, বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, এবং শয়তানের ধোকা থেকে বাচঁতে সাহায্য পাওয়া যায়।

তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা।

নামাজের সময়সূচি ২০২৪

ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি

তারিখ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ (ইংরেজি), ৩০ পৌষ ১৪৩০ বাংলা, ১ রজব ১৪৪৫ হিজরি

সময়:

  • ফজর: ৫:২৬ মিনিট
  • জোহর: ১২:১০ মিনিট
  • আসর: ৩:৫৪ মিনিট
  • মাগরিব: ৫:৩৪ মিনিট
  • ইশা: ৬:৫১ মিনিট

অন্যান্য বিভাগীয় শহরের জন্য উল্লেখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগে সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, তাহলো-

  • বিয়োগ করতে হবে:
    • চট্টগ্রাম: -০৫ মিনিট
    • সিলেট: -০৬ মিনিট
  • যোগ করতে হবে:
    • খুলনা: +০৩ মিনিট
    • রাজশাহী: +০৭ মিনিট
    • রংপুর: +০৮ মিনিট
    • বরিশাল: +০১ মিনিট

উল্লেখ্য:

  • নামাজের সময় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের উপর নির্ভর করে। তাই প্রতিদিনের সময়সূচি পরিবর্তিত হতে পারে।
  • নামাজের আগে অজু করা ফরয।
  • নামাজের সময় অন্য কোনো কাজ করা মাকরূহ।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে নামাজের নিয়মিত আদায় করার তাওফিক দান করুন।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উপস্থাপনা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ২০২৪

ফজর নামাজ

  • ফজর নামাজের সময় সূর্যোদয়ের আগে।
  • ফজর নামাজের চার রাকাত ফরয।
  • ফজর নামাজের পর সুন্নাত নামাজ পড়া উত্তম।

জোহর নামাজ

  • জোহর নামাজের সময় সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্য মধ্যাকাশে থাকা পর্যন্ত।
  • জোহর নামাজের চার রাকাত ফরয।
  • জোহর নামাজের পর চার রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়া উত্তম।

আসর নামাজ

  • আসর নামাজের সময় সূর্য মধ্যাকাশে থেকে হেলে পড়া পর্যন্ত।
  • আসর নামাজের চার রাকাত ফরয।
  • আসর নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়া উত্তম।

মাগরিব নামাজ

  • মাগরিব নামাজের সময় সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
  • মাগরিব নামাজের তিন রাকাত ফরয।
  • মাগরিব নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়া উত্তম।

ইশা নামাজ

  • ইশা নামাজের সময় সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত।
  • ইশা নামাজের চার রাকাত ফরয।
  • ইশা নামাজের পর তিন রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়া উত্তম।

নামাজের ফযিলত

  • নামাজ হলো ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম।
  • নামাজ হলো আল্লাহর সাথে যোগাযোগের মাধ্যম।
  • নামাজ মানুষকে আল্লাহর স্মরণে রাখে।
  • নামাজ মানুষকে সৎকর্মের দিকে পরিচালিত করে।
  • নামাজ মানুষকে পাপ থেকে বিরত রাখে।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে নামাজের নিয়মিত আদায় করার তাওফিক দান করুন।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম

নামাজের নিয়ম হলো এমন একটি নিয়ম যার মাধ্যমে মুসলমানরা নামাজ আদায় করে। নামাজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে, তাঁর স্মরণে থাকে এবং তাঁর নির্দেশাবলী মেনে চলার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করে।

নামাজের নিয়মগুলি নিম্নরূপ:

১. অজু করা

নামাজের আগে অজু করা ফরয। অজু করার মাধ্যমে শরীরের বাহ্যিক অপবিত্রতা দূর হয় এবং অন্তরের পবিত্রতা অর্জন হয়।

২. নিয়ত করা

নামাজের আগে নিয়ত করা ফরয। নিয়ত হলো মনে মনে ইচ্ছা করা। নামাজের নিয়ত হলো, “আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ফজরের (বা জোহরের, আসরের, মাগরিবের, বা ইশার) চার রাকাত ফরয নামাজ আদায় করছি।”

৩. কায়দা করা

নামাজের সময় কায়দা করা ফরয। কায়দা হলো নামাজের নির্দিষ্ট ভঙ্গিমা। নামাজের কায়দাগুলি নিম্নরূপ:

  • সূচনা বৈঠক: নামাজ শুরু করার সময় ডান পা সামনে রেখে বাম পা পিছনে রেখে বসা।
  • কিয়াম: দাঁড়ানো।
  • রুকু: হাঁটু ভেঙে মাথা ঝুঁকিয়ে হাত হাঁটুর উপর রাখা।
  • সেজদা: মাথা, হাত, হাঁটু এবং পা মাটিতে স্পর্শ করা।
  • আউযুবিল্লাহ: নামাজের শুরুতে আল্লাহর কাছে পাপ থেকে আশ্রয় চাওয়া।
  • ফাতেহা: সূরা ফাতেহা পাঠ করা।
  • আল্লাহু আকবার: “আল্লাহ মহান” বলা।
  • সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ: “আল্লাহ তাঁর প্রশংসার জন্য যে ব্যক্তিকে শুনেন।”
  • রাব্বানা লাকাল হামদ: “হে আমাদের রব! তোমার জন্যই সকল প্রশংসা।”
  • তাশাহুদ: “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।”
  • দুরুদ শরীফ: “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মদিন।”
  • দোয়া মাসুরা: “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন আজাবি জাহান্নাম, ওয়া মিন আজাবি কবরি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাত, ওয়া মিন ফিতনাত দাজ্জাল।”

৪. সূরা পাঠ করা

নামাজের প্রতিটি রাকাতে সূরা পাঠ করা সুন্নাত। সূরা পাঠ করার সময় মনোযোগ দিয়ে সূরাগুলির অর্থ বুঝে পড়া উচিত।

৫. দোয়া করা

নামাজের শেষে দোয়া করা সুন্নাত। দোয়া করার সময় নিজের মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং চাওয়া-পাওয়া আল্লাহর কাছে জানাতে হয়।

নামাজের নিয়মগুলি যথাযথভাবে পালন করার মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে এবং নিজেদের জীবনকে সুন্দর ও অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর আমল

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর কিছু আমল রয়েছে যা পালন করলে অনেক ফজিলত লাভ করা যায়। এই আমলগুলো রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেই করতেন এবং সাহাবাগণকে করতে উৎসাহিত করতেন।

  • আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া

নামাজের পর প্রথমেই তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া উচিত। আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ হল "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।" এই দোয়াটি পাঠ করলে গুনাহ মাফ হয় এবং ইবাদত কবুল হয়।

  • সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার পড়া

নামাজের পর প্রতিটি ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পড়া উচিত। এই দোয়াগুলো পাঠ করলে ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।

  • আয়াতুল কুরসি পড়া

নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। এই দোয়াটি পাঠ করলে বাড়ি-ঘর থেকে শয়তান দূর থাকে এবং জান্নাতের পথে সহায়তা পাওয়া যায়।

  • সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়া

নামাজের পর প্রতিটি তিনবার করে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়া উচিত। এই দোয়াগুলো পাঠ করলে বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং শয়তানের ধোকা থেকে বাচঁতে সাহায্য পাওয়া যায়।

  • দরুদ শরিফ পড়া

নামাজের পর ১০ বার দরুদ শরিফ পড়া উচিত। দরুদ শরিফ পড়ার ফলে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং তার শাফা'আত লাভের সুযোগ তৈরি হয়।

  • মোনাজাত করা

নামাজের পর আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত। নিজের এবং পরিবারের জন্য ভালোবাসা, সুস্থতা, হেফাজত এবং রিজিকের জন্য দোয়া করা উচিত।

এই আমলগুলো পালন করলে জীবনে অনেক কল্যাণ আসে। আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়, গুনাহ মাফ হয়, বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং জান্নাতের পথ সহজ হয়।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ পড়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পড়বে, তার সব পাপ ক্ষমা করা হবে, যদিও সে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ পাপ করে থাকে।" (সহীহ বুখারী)

তাসবিহ হল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করা। সুবহানাল্লাহ অর্থ হল "আমি আল্লাহকে পবিত্র ঘোষণা করছি।" আলহামদুলিল্লাহ অর্থ হল "সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।" আল্লাহু আকবার অর্থ হল "আল্লাহ সবচেয়ে বড়।"

তাসবিহ পড়ার নিয়ম হল, প্রথমে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া। এরপর প্রতিটি ৩৩ বার করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পড়া। মোট ৯৯ বার তাসবিহ পড়া হয়ে গেলে, "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির" দোয়াটি পড়া।

তাসবিহ পড়ার সময় শান্তভাবে এবং মনোযোগ দিয়ে পড়া উচিত। মনের মধ্যে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা এবং ভক্তি থাকা উচিত।

তাসবিহ পড়ার ফজিলত হল:

  • গুনাহ মাফ হয়।
  • ঈমান বৃদ্ধি পায়।
  • আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।
  • বাড়ি-ঘর থেকে শয়তান দূর থাকে।
  • জান্নাতের পথে সহায়তা পাওয়া যায়।
  • বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • শয়তানের ধোকা থেকে বাচঁতে সাহায্য পাওয়া যায়।

তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ পড়া।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও সূরা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম

নামাজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে, তাঁর স্মরণে থাকে এবং তাঁর নির্দেশাবলী মেনে চলার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করে।

নামাজের নিয়মগুলি নিম্নরূপ:

১. অজু করা

নামাজের আগে অজু করা ফরয। অজু করার মাধ্যমে শরীরের বাহ্যিক অপবিত্রতা দূর হয় এবং অন্তরের পবিত্রতা অর্জন হয়।

২. নিয়ত করা

নামাজের আগে নিয়ত করা ফরয। নিয়ত হলো মনে মনে ইচ্ছা করা। নামাজের নিয়ত হলো, “আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ফজরের (বা জোহরের, আসরের, মাগরিবের, বা ইশার) চার রাকাত ফরয নামাজ আদায় করছি।”

৩. কায়দা করা

নামাজের সময় কায়দা করা ফরয। কায়দা হলো নামাজের নির্দিষ্ট ভঙ্গিমা। নামাজের কায়দাগুলি নিম্নরূপ:

  • সূচনা বৈঠক: নামাজ শুরু করার সময় ডান পা সামনে রেখে বাম পা পিছনে রেখে বসা।
  • কিয়াম: দাঁড়ানো।
  • রুকু: হাঁটু ভেঙে মাথা ঝুঁকিয়ে হাত হাঁটুর উপর রাখা।
  • সেজদা: মাথা, হাত, হাঁটু এবং পা মাটিতে স্পর্শ করা।
  • তাশাহুদ: “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।”

৪. সূরা পাঠ করা

নামাজের প্রতিটি রাকাতে সূরা পাঠ করা সুন্নাত। সূরা পাঠ করার সময় মনোযোগ দিয়ে সূরাগুলির অর্থ বুঝে পড়া উচিত।

৫. দোয়া করা

নামাজের শেষে দোয়া করা সুন্নাত। দোয়া করার সময় নিজের মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং চাওয়া-পাওয়া আল্লাহর কাছে জানাতে হয়।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সূরা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে পড়া সূরাগুলি হলো:

ফজরের নামাজ

  • প্রথম রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং সূরা বাকারার প্রথম কয়েকটি আয়াত।
  • দ্বিতীয় রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং যেকোনো সূরা।

জোহরের নামাজ

  • প্রথম রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং সূরা বাকারার প্রথম কয়েকটি আয়াত।
  • দ্বিতীয় রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং যেকোনো সূরা।
  • তৃতীয় রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং সূরা ইখলাস।
  • চতুর্থ রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং যেকোনো সূরা।

আসর, মাগরিবের এবং ইশার নামাজ

  • প্রথম রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং সূরা বাকারার প্রথম কয়েকটি আয়াত।
  • দ্বিতীয় রাকাতে: সূরা ফাতেহা এবং যেকোনো সূরা।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম এবং সূরাগুলি যথাযথভাবে পালন করলে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে এবং নিজেদের জীবনকে সুন্দর ও অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের তাসবিহ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ পড়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পড়বে, তার সব পাপ ক্ষমা করা হবে, যদিও সে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ পাপ করে থাকে।" (সহীহ বুখারী)

তাসবিহ হল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করা। সুবহানাল্লাহ অর্থ হল "আমি আল্লাহকে পবিত্র ঘোষণা করছি।" আলহামদুলিল্লাহ অর্থ হল "সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।" আল্লাহু আকবার অর্থ হল "আল্লাহ সবচেয়ে বড়।"

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ পড়ার নিয়ম

  1. প্রথমে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া।
  2. এরপর প্রতিটি ৩৩ বার করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পড়া।
  3. মোট ৯৯ বার তাসবিহ পড়া হয়ে গেলে, "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির" দোয়াটি পড়া।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ পড়ার ফজিলত

  • গুনাহ মাফ হয়।
  • ঈমান বৃদ্ধি পায়।
  • আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।
  • বাড়ি-ঘর থেকে শয়তান দূর থাকে।
  • জান্নাতের পথে সহায়তা পাওয়া যায়।
  • বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • শয়তানের ধোকা থেকে বাচঁতে সাহায্য পাওয়া যায়।

তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ পড়া।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ কয়টি

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ মোট ১৩টি। এর মধ্যে ৭টি ফরজ হলো নামাজের বাইরের কাজ, যা নামাজের আগে বা পরে করতে হয়। আর ৬টি ফরজ হলো নামাজের মধ্যে করতে হয় এমন কাজ।

নামাজের বাইরের ফরজ

  • অজু করা: নামাজের আগে অজু করা ফরয। অজু করার মাধ্যমে শরীরের বাহ্যিক অপবিত্রতা দূর হয় এবং অন্তরের পবিত্রতা অর্জন হয়।
  • নিয়ত করা: নামাজের আগে নিয়ত করা ফরয। নিয়ত হলো মনে মনে ইচ্ছা করা। নামাজের নিয়ত হলো, “আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ফজরের (বা জোহরের, আসরের, মাগরিবের, বা ইশার) চার রাকাত ফরয নামাজ আদায় করছি।”
  • কিয়াম করা: নামাজের সময় কায়দা করা ফরয। কায়দা হলো নামাজের নির্দিষ্ট ভঙ্গিমা। নামাজের কায়দাগুলি নিম্নরূপ:
    • সূচনা বৈঠক: নামাজ শুরু করার সময় ডান পা সামনে রেখে বাম পা পিছনে রেখে বসা।
    • কিয়াম: দাঁড়ানো।
    • রুকু: হাঁটু ভেঙে মাথা ঝুঁকিয়ে হাত হাঁটুর উপর রাখা।
    • সেজদা: মাথা, হাত, হাঁটু এবং পা মাটিতে স্পর্শ করা।
    • তাশাহুদ: “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।”

নামাজের মধ্যের ফরজ

  • কিয়াম করা: নামাজের প্রতিটি রাকাতে কিয়াম করা ফরয।
  • তাকবির তাহরিমা পড়া: নামাজ শুরু করার সময় “আল্লাহু আকবার” বলে তাকবির তাহরিমা পড়া ফরয।
  • সূরা ফাতেহা পড়া: প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়া ফরয।
  • রুকু করা: প্রতিটি রাকাতে রুকু করা ফরয।
  • সেজদা করা: প্রতিটি রাকাতে ২টি সেজদা করা ফরয।
  • তাশাহুদ পড়া: প্রতিটি রাকাতে তাশাহুদ পড়া ফরয।
  • সালাম ফিরানো: নামাজ শেষে সালাম ফিরানো ফরয।

নামাজের ফরজগুলি ছেড়ে দিলে বা ভুল করলে নামাজ ভেঙ্গে যায় এবং কাফফারা আদায় করতে হয়।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুন্নত কত রাকাত

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের আগে-পরে মোট ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে। এর মধ্যে ফজরের আগে ২ রাকাত, জোহরের আগে ৪ রাকাত, আসরের পরে ২ রাকাত, মাগরিবের পরে ২ রাকাত এবং ইশার পরে ২ রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে।

ফজরের সুন্নত নামাজ

  • দুই রাকাত
  • ফজরের ফরয নামাজের আগে

জোহরের সুন্নত নামাজ

  • চার রাকাত
  • জোহরের ফরয নামাজের আগে

আসরের সুন্নত নামাজ

  • দুই রাকাত
  • আসরের ফরয নামাজের পরে

মাগরিবের সুন্নত নামাজ

  • দুই রাকাত
  • মাগরিবের ফরয নামাজের পরে

ইশার সুন্নত নামাজ

  • দুই রাকাত
  • ইশার ফরয নামাজের পরে

সুন্নত নামাজ ফরজ নামাজের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। সুন্নত নামাজ পড়ার ফলে অনেক ফজিলত রয়েছে। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর সুন্নত নামাজ পড়বে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।" (তিরমিজি)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url