অযোধ্যার রাম মন্দির এবং বাবরি মসজিদ এর ইতিহাস, আন্দোলন এবং প্রাণ প্রতিষ্ঠান

 

বাবরি মসজিদে প্রথম হামলা হয় ১৯৩৪ সালে। মসজিদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। তার পরে ১৯৪৯ সালে মসজিদকে অপবিত্র করে দেওয়া হয়। ১৯৯২ সালে করসেবকদের গাঁইতির আঘাতে ধুলোয় মিশে যায় বাবরি মসজিদের গম্বুজ। স্মরণে থাক, সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, এই তিনটি ঘটনাই আইনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।

'মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে'

আজ থেকে আর কেউ কপালে গেরুয়া আবির মেখে এই হুঙ্কার দিতে পারবে না। কারণ মন্দির এখন মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। মন্দির তৈরির কাজ পুরো শেষ না হলেও রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়ে গিয়েছে।

আসুন, এই বেলা কিছু তথ্য স্মরণ করা যাক।

কোনও হিন্দু মন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল কি?

সুপ্রিম কোর্টের ২০১৯-এর নভেম্বর মাসের রায় এমন কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।

পুরাতত্ত্ব বিভাগ বলেছিল, দ্বাদশ শতাব্দীতে অযোধ্যায় মন্দির ছিল। বেশ কথা। বাবর ভারতে এলেন তার চারশো বছর পরে। এই মাঝের সময়ে কী হল, কেউ জানে না। সেই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপরে মসজিদ তৈরি হয়েছিল কি না তার প্রমাণ মেলেনি।

সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের পক্ষে রায় দিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সেই রায়েই বলেছিল, 'পুরাতত্ত্ব বিভাগের রিপোর্টে একটি জরুরি প্রশ্নের উত্তর মেলেনি, সেটি হল, মসজিদ তৈরির জন্য কোনও হিন্দু মন্দির ভাঙ্গা হয়েছিল কি না!'

রাষ্ট্র যখন নিজেই আমার, আপনার কপালে গেরুয়া আবির লেপে দিতে উদ্যত, আসুন, আরও কিছু কথা নোটবুকে লিখে রাখি। সবটাই সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায় থেকে।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯-এর ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেছিল, সাড়ে চারশো বছরের পুরনো সেই মসজিদ থেকে মুসলিমদের অন্যায় ভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বেঞ্চ বলেছিল, ইসলামের রীতি মেনেই বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল। সেখানে নিয়মিত প্রার্থনা চলত। ১৯৪৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সেখানে শেষ বার নমাজ পড়া হয়েছিল। তার পরেই ২২ ডিসেম্বরের রাতে মসজিদের মধ্যে হিন্দু দেবতার মূর্তি রেখে মসজিদকে অপবিত্র করে ফেলা হয়। হিন্দু সংগঠনগুলির দাবি ছিল, অনেক আগে থেকেই ওই মসজিদ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছিল।

বাবরি মসজিদে প্রথম হামলা হয় ১৯৩৪ সালে। মসজিদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। তার পরে ১৯৪৯ সালে মসজিদকে অপবিত্র করে দেওয়া হয়। ১৯৯২ সালে করসেবকদের গাঁইতির আঘাতে ধুলোয় মিশে যায় বাবরি মসজিদের গম্বুজ। স্মরণে থাক, সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, এই তিনটি ঘটনাই আইনের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, ‘অঙ্ক কষে’ মসজিদ অপবিত্র করে সেখান থেকে মুসলিমদের খেদিয়ে দিয়ে ‘তাঁদের প্রার্থনাস্থল থেকে বঞ্চিত’ করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত মনে করিয়ে দিয়েছিল, রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ নিয়ে মামলার ফয়সালা হওয়ার আগেই মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ‘আইনের প্রতি দায়বদ্ধ’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে’ এ ভাবে মসজিদ থেকে মুসলিমদের বঞ্চিত করাটা উচিত হয়নি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url